১। অ্যালবুমিনুরিয়া
অ্যালবুমিনুরিয়া কিডনি রোগের লক্ষণ এবং এর অর্থ হল আপনার প্রস্রাবে খুব বেশি অ্যালবুমিন রয়েছে ।কিন্তু একটি ক্ষতিগ্রস্ত বা ড্যামেজ কিডনি কিছু অ্যালবুমিনকে প্রস্রাবে যেতে দেয় না বা ছাকতে পারে না কারণ কিডনি তার সেই ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। আপনার প্রস্রাবে অ্যালবুমিন যত কম হবে তত ভালো। কখনও কখনও অ্যালবুমিনুরিয়াকে প্রোটিনুরিয়াও বলা হয়।
অ্যালবুমিনুরিয়া কমানোর কয়েকটি উপায়।
১।একজন ডায়েটিশিয়ান দেখান ।
২।ওজন কমান, যদি আপনার ওজন বেশি হয় ।
৩।বেশি লবণ আছে এমন খাবার না খাওয়া ।
৪।সোডিয়াম বেশি এমন খাবার এড়িয়ে চলুন ।
৫।নিয়মিত সঠিক পরিমাণে এবং সঠিক প্রোটিন খান।
২। EGFR :
EGFR কি?
আপনার কিডনি রোগ আছে কিনা বা কোন পর্যায়ে আছে তা নির্ধারণ করতে ডাক্তার ও নিউট্রিশনিস্ট আপনাকে (ইজিএফআর) পরীক্ষা করতে বলেন। eGFR আপনার রক্ত থেকে টক্সিন বা বর্জ্য ফিল্টার করার জন্য আপনার কিডনির ক্ষমতা কতটুকু তা পরিমাপ করে। ইজিএফআর এর সংখ্যা যত কম হয়, কিডনি এর কাজ কাজ করার ক্ষমতা তত কম হয়। এই টেস্ট দিয়ে কিডনি ফেইলিওর কোন স্টেজে আছে তাও জানা যায়।
কাদের এই টেস্ট করা উচিত
১।জন্মগত ত্রুটি যা কিডনির কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে।
২।করোনারি আর্টারি ডিজিজ বা হৃদরোগ আছে যাদের।
৩।ডায়াবেটিস আছে যাদের।
৪।কিডনি রোগের পারিবারিক ইতিহাস আছে যাদের।
৫।ঘন ঘন মূত্রনালীর ইনফেকশন (ইউটিআই) হয় যাদের।
৬।উচ্চ রক্তচাপ আছে যাদ ।
৭।ধূমপানের করেন যারা।
৮।অতিরিক্ত ওজন যার ।
বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে যা একজন সাধারণ মানুষের সাবধান হওয়া উচিৎ
সবসময় ক্লান্তি
নির্দিষ্ট কোন কারণ ছাড়াই সবসময় ক্লান্তি, দুর্বল অনুভব করা, ওজন কমে যাওয়া এরকম যদি নিয়মিত হতে থাকে। কিডনি ঠিক মতো কাজ করে না । সে জন্য রক্ত স্বল্পতা দেখা দেয় তাই ক্লান্তিভাব হয়।
ফোলাভাব
বিশেষ করে চোখের নিচে, পায়ের গোড়ালি ও হাতে ফোলা ভাব। একটু বেশি ঘুমালে বা অ্যালার্জির কারণে ফুলে যাওয়ার সাথে কিডনির অসুখে ফোলার পার্থক্য হচ্ছে এর স্থায়িত্ব।
যদি চোখের নিচে ও পায়ের গোড়ালি ফোলাভাব স্থায়ী হয়, এক সপ্তাহ বা দুই সপ্তাহ হয় তাহলে সেটা কিডনি রোগের কারণে হতে পারে।কিডনি রোগের সঠিক লক্ষণ ও প্রতিকার
কিডনি যখন শরীর থেকে পানি বের করতে পারে না তখন তা শরিরকে ফুলিয়ে দেয় ।
ঘুমের ব্যাঘাত
কিডনি যখন শরীর থেকে পানি নিঃসরণ করতে পারে না তখন কিছু পানি ফুসফুসে জমে থাকে আর সে কারণে ঘুমের সমস্যা হতে পারে। কিডনি রোগের সঠিক লক্ষণ ও প্রতিকার
দাঁড়ানো অবস্থায় বুক ভরে শ্বাস নিতে অসুবিধা হয় না কিন্তু দেখা যায় শোয়া অবস্থায় বুক পুরোপুরি প্রসারিত হতে পারে না। পানি জমলে সমস্যাটা বেশি হয়। ঘুমন্ত অবস্থায় শ্বাসে সমস্যা হয় বলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে।
ত্বকের সমস্যা ও রঙ পরিবর্তন
কিডনির কাজ হল শরীর থেকে সব ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে ফেলা । কিডনি সেই কাজটি ঠিকমতো করতে না পারলে ত্বকে এর ছাপ পরতে পারে ।
যেমন শরীরের ইউরিয়া বের হতে না পেরে ত্বকের নিচে জমা হয়ে চুলকানি হয়, ত্বকের রঙ পরিবর্তন ও খসখসে হয় এবং ফুসকুড়িও হতে পারে।
প্রস্রাবে পরিবর্তন
ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া অথবা প্রস্রাব কমে যাওয়া দুটোই কিডনির সমস্যার লক্ষণ। শরীর থেকে পানি বের করা ছাড়াও পানি শুষে নেয় কিডনি। সেটি করতে না পারলে বেশি প্রস্রাব হয়।
প্রস্রাব লালচে হলে, প্রস্রাবে ফেনা হলে। কিডনিতে পাথর ও ক্যান্সার এবং টিউমারের কারণে প্রস্রাবের সাথে রক্ত যেতে পারে। কিডনি’র সমস্যা হলে শরীর থেকে প্রোটিন অনেক বেশি বের হয়ে যায় তাই ফেনা ভাব হতে পারে ।
সাবধান হতে যা করা যেতে পারে
- ১।দুটি অসুখকে কিডনির বড় শত্রু বলা হয়। একটি হল উচ্চ রক্তচাপ অন্যটি ডায়াবেটিস, এই গুল নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই জরুরী।
- ২।বেশি দিন ধরে ইউরিন ইনফেকশন, কিডনিতে পাথর ও প্রস্টেটের সমস্যা কিডনির ক্ষতি করে। তাই এই অসুখগুলো কখনই পুষে রাখবেন না।
- ৩।ব্যথানাশক ঔষধকে বলা হয় কিডনির জন্য বিষ। ইচ্ছেমত মুড়িমুড়কির মতো ব্যথানাশক ঔষধ খাওয়া থেকে সম্পুন বিরত থাকুন।
- ৪।কিছু অ্যান্টিবায়োটিকস চিকিৎসকে পরামর্শ ছাড়া খাওয়া একে বারেই উচিৎ নয়।
আরো পড়ুন