আন্তর্জাতিক
বাংলাদেশে বেড়েছে ডিমের দাম, বিশ্বজুড়েও বাড়ছে কেন?

বাংলাদেশে বেড়েছে ডিমের দাম, বিশ্বজুড়েও বাড়ছে কেন? বাংলাদেশে ডাক্তারদের মত অনুসারে প্রাণিজ আমিষের অন্যতম উৎস বলে ধরা হতো ডিম কে কিন্তু কয়েকদিন ধরে বর্তমান বাজারে ডিমের যে মূল্য দেখা যাচ্ছে এটা এখন সীমিত আয়ের মধ্যবিত্ত মানুষের কাছে ‘সাশ্রয়ী’ কোনও পণ্য নয়। বাজারের ব্যয় জন্য হিমশিম খেতে হচ্ছে মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যদের।
জানুয়ারি মাসে বাজারে এক ডজন ডিমের দাম ১২০ টাকা ছিল বা এর চায় কিছু কম বা বেশি । যা ফেব্রুয়ারি মাসে ডিমের দাম বেড়ে দারায় ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। এর আগেও গত বছরের অগাস্ট মাসে ডিমের দাম হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছিল।
সেইসময় ডিমের বাজার মূল্য নিয়ে যে আলোড়ন উঠেছিল সেই প্রেক্ষাপটে বাণিজ্য মন্ত্রী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন বাংলাদেশ এর বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য প্রয়োজনে বিদেশ থেকে ডিম আমদানি করবে বাংলাদেশ সরকার তবে এর কিছুদিন পরে দাম কমতির দিকে থাকলেও গত কয়েক মাস ধরে ডিমের দাম ছিল বাড়তির দিকে।
আর চলতি এই সপ্তাহে ডিম হালিতে বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা করে।হঠাৎ করে ডিমের দাম আবার বাড়ছে কেন?
পোল্ট্রি মরগিদের খাদ্যের দাম বেড়েছে তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে যে খাদ্য ও জ্বালানি সংকট তৈরি হয়েছে সেটার প্রভাব পড়েছে পোল্ট্রি খাদ্যের দামে উপর ।
পোল্ট্রি খাদ্য তৈরি জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালে ভুট্টা, সয়ামিলসহ বিভিন্ন কাঁচামালের । আর এই পোল্ট্রি শিল্পের প্রায় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশই আমদানি নির্ভর। পোল্ট্রি খাদ্য, জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে, সে কারণে ডিম ও মুরগির দামও বেড়েছে -বলছেন ব্যবসায়ীরা।

পোল্ট্রি শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্ববাজারে কাঁচামালের দাম যেমন বেড়েছে, তেমনি ডলারের দামের কারণে আমদানির খরচ বেড়েছে। এছাড়া, ব্যাংকগুলোতে ডলার সংকট থাকায় এলসি খুলতে সমস্যা হচ্ছে। এ কারণে খাদ্য আমদানি বাজারে সরবরাহে ঘাটতিও তৈরি হয়েছে।
এই ফরেন কারেন্সির সমস্যার কারণে এই খাতে পচুর প্রভাব পড়েছে। এছাড়া রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে খাদ্যের চালান আসতে সমস্যা হচ্ছে। এটাও ফ্যাক্টর বলছিলেন বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট এম এম খান।
মি. খান বলছেন, পোল্ট্রি খাদ্যের চড়া দামের কারণে জন্য লোকসান দিয়ে ছোট অনেক খামার বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে উৎপাদন এখন অনেক কম।
মুরগির বাচ্চার দীর্ঘদিন ধরে দাম না পাওয়ায় দেশে মুরগি ও ডিমের বৃদ্ধি পেয়েছে বলে বাংলাদেশ পোল্ট্রি শিল্প সংশ্লিষ্টরা মনে করেন
গত এক বছরে প্রায় ৪০ শতাংশ মুরগির খামার বন্ধ হয়ে গেছে।” তাই
এরকম দাম বাড়তে থাকলে বাকি মুরগির খামারগুলো বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন
তিনি বলছেন, ডিমের দাম বাড়লেও খামারিরা এর কোনও লাভবান না। কারণ বিভিন্ন জায়গা বিভিন্ন আড়ত ব্যবসায়ীরা ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেয়। দেশের যে কয়টি জায়গায় দাম নির্ধারণ হয় সেটাকে কেন্দ্র করেই দেশব্যাপী ডিমের দাম ওঠানামা করে এর ফলে এখন সীমিত আয়ের মধ্যবিত্ত মানুষের কাছে ‘সাশ্রয়ী’ কোনও পণ্য নয়
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডিম এর দাম বেঁধে দিলেও বাজারে এর প্রভাব পড়ে না, মরগির খাদ্যের দাম এবং পরিবহন খরচ ইত্যাদি বিষয়ের ওপর নির্ধারণ ডিমের দাম হয়।
বাজারে ডিমের যে চাহিদা এর বিপরীতে কম সরবরাহ হলেও ডিমের দাম বেড়ে যায়।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলছেন ডিমে উৎপাদন খরচ কমাতে না পারলে ডিমের দাম কমবে না
জানুয়ারি মাসে গত বছরের ডিসেম্বর মাসের তুলনায় ডিমের দাম বেড়েছে ৮.৫ শতাংশ। আর জানুয়ারি জুড়ে ডিমের দাম বেড়েছে ৭০ দশমিক এক শতাংশ।তবে শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বজুড়েও বেড়েছে ডিমের দাম।
জাপানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, টোকিওতে ডিমের দাম রেকর্ড ছুঁয়েছে বৃহস্পতিবার।
তবে শুধু বার্ড ফ্লু’র প্রাদুর্ভাবেই যে বিশ্বজুড়ে ডিমের দাম বেড়েছে তা নয়। বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবও এর অন্যতম কারণ।